চট্টগ্রামে আগুনে পুড়ে একই পরিবারের ৫ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু

নবকণ্ঠ ডেস্ক:

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নে রান্না ঘরের চুলা থেকে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন গৃহকর্তা সিএনজি অটোরিক্সা চালক খোকন বসাক (৪২)।
ফায়ার সার্ভিসের ৫টি গাড়ি প্রায় দুইঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর পুলিশ জানালা কেটে পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করে বলে থানার ওসি মাহাবুব মিল্কি নিশ্চিত করেছেন। পুরো পরিবার আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মহাজনপাড়ার খোকন বসাকের বসতঘরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এসময় গৃহকর্তা খোকন বসাক আগুনের লেলিহান শিখার মধ্যদিয়ে কোনো রকম ঘর থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হলেও ভিতরে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা তার বাবা কাঙ্গাল বসাক (৭০), মা ললীতা বসাক (৬০), স্ত্রী লাকী দে (৩২), ছেলে সৌরভ বসাক (১২) ও মেয়ে শয়ন্তী বসাক (৬) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। গুরুতর দগ্ধ গৃহকর্তা খোকন বসাককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। অগ্নিকা-ে ঘরের সামনে রাখা খোকন বসাকের মালিকানাধীন একটি সিএনজি অটো রিকশাও ভস্মীভূত হয়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক খোকন বসাকের বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে সেমিপাকা (পাকা ওয়াল ও টিনশেড) ঘরে বসবাস করতেন। তিন কক্ষবিশিষ্ট ঘরটিতে একটিমাত্র দরজা ছিল। সেই দরজার কাছে ছিল তাদের রান্নাঘর। রান্নাঘর আর মূল ঘরের মাঝখানে ছিল অনেকগুলো কাঠের লাকড়ির স্তুপ।
পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুন লেগে সেখানে মজুদকৃত বিপুল পরিমাণ কাঠের লাকড়ির মাধ্যমে তা পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। যেহেতু ঘরের দরজা ছিল একটা, আর সেই দরজা ঘিরেই ছিল আগুনের মূল উৎসস্থল। তাই ভাগ্যগুণে গৃহকর্তা খোকন বসাক আহত অবস্থায় বের হতে পারলেও ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা ঘরের অন্য বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা বের হতে পারেননি।
রাঙ্গুনিয়া ফায়ার স্টেশনের ইনচার্জ কামরুজ্জামান সুমন জানান, রাত ২টা ১০ মিনিটের দিকে টিনশেড ঘরে অগ্নিকা-ের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি গাড়ি ঘটনাস্থলে যায়। দরজা ভেঙে একজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ভোররাত ৪টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রান্না ঘরের চুলা থেকে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মাহাবুব মিল্কি বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীমসহ আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আটকে পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাই। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে প্রায় দুই ঘন্টা পর। এ সময় বসতঘরের জানালার গ্রিল কেটে আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ৫ ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। বসতঘর সংলগ্ন রান্নাঘরের চুলা থেকে এই অগ্নিকা-ের সূত্রপাত হতে পারে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।  সূত্র: বাসস

সংবাদটি সর্বমোট 150 বার পড়া হয়েছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *