নবকণ্ঠ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে করোনা মহামারীর চাপ সত্ত্বেও ভারত ও পাকিস্তানের মতো দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রসারিত হয়েছে ৩.৮ শতাংশ।
আজ সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা একথা বলেন।
গত ৫ জানুয়ারি সংবিধান অনুযায়ি বছরের প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিনে সংসদে রাষ্ট্রপতি এ ভাষণ দেন। রীতি অনুযায়ি এ ভাষণ সম্পর্কে চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এ প্রস্তাবটি সমর্থন করেন সরকারি দলের সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার।
ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনার ১৬তম দিনে আজ অংশ নেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সরকারি দলের সদস্য মো. কামরুল ইসলাম, আ. স. ম. ফিরোজ, আব্দুল আজিজ, সামছুল আলম দুদু, মো. ছলিম উদ্দিন তরফদার, মো. আনোয়ার হোসেন (হেলাল), মনিরা সুলতানা ও ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ।
তারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী, যোগাযোগ, আর্থ-সামাজিক, শিক্ষা, যুব ও ক্রীড়া, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি)সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরেন।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য আবদুল আজিজ বলেন, “করোনার মহামারীর চাপ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ প্রসারিত হয়েছে, যেখানে ভারতের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ এবং করোনার সময় পাকিস্তানের অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে”।
এমনকি যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও জাপানের মতো বিভিন্ন ধনী দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রাণবন্ত ছিল বলে তিনি তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশের সাফল্য এখন আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হচ্ছে এবং সে কারণেই আন্তর্জাতিক মদ্র্রা তহবিল (আইএমএফ) আরও ৪.৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান অনুমোদন করেছে যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অনুদান। বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে বলে তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলায় অনেক বেশি সক্ষমতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, বিএনপি-জামাত শাসনামলে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে দেশের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫৪৩ মার্কিন ডলার আর এখন তা ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
সরকারি দলের সদস্য মো. কামরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশের যে উন্নয়ন ও অগ্রগতি হয়েছে, এই উন্নয়নকে থামিয়ে দিতে বিএনপি-জামাত স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত করে যাচ্ছে। তারা দেশের অগ্রগতিকে থামিয়ে দিয়ে দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চায়। বিএনপি-জামাত ও স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। এজন্যই তাদের তথাকথিত আন্দোলনে দেশের মানুষের কোন সমর্থন নেই। দেশের মানুষ আবারো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগকেই ভোট দেবে।
তিনি বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশের মানুষ কিছুটা সমস্যায় রয়েছে সত্যি, তবে দেশের মানুষ বিশ্বাস করে একমাত্র শেখ হাসিনার মাধ্যমেই এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ লাভ করা সম্ভব।
আ.স.ম. ফিরোজ বলেন, বিএনপি-জামাত চক্রের মতো স্বাধীনতা বিরোধীরা ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে যেখানে সরকার গত চৌদ্দ বছর ধরে জনগণের কল্যাণে সংগ্রাম করছে।
সংসদ সদস্যরা আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কোভিড অতিমারির অভিঘাত পেরিয়ে এখন বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সরকার পথচ্যুত হয়নি। এই অগ্রযাত্রার ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। জনগণের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন এবং তাঁর সুযোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও স্মার্ট দেশ হবে।
তারা বলেন, এদেশের মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখতে চায়। কারণ তিনি দেশের মানুষকে যে প্রতিশ্রুতি দেন তা তিনি রক্ষা করেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।
সরকারের সাফল্যের বিস্তারিত তুলে ধরে দেশকে শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করার জন্য সময়োপযোগী ভাষণ দেয়ার জন্য সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে তারা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের জন্য গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সূত্র: বাসস
সংবাদটি সর্বমোট 294 বার পড়া হয়েছে