আসাদুজ্জামান রিপন:
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় বেড়েছে যাত্রীবাহি বাসের ভাড়া। এতে বাড়তি খরচ বাঁচাতে নরসিংদীর রেলওয়ে স্টেশনগুলোতে বেড়েছে যাত্রীদের ভীড়। স্টেশনগুলোতে ট্রেনের পর্যাপ্ত যাত্রাবিরতি না থাকায় প্রতিদিন উপচেপড়া ভীড় উপেক্ষা করে ট্রেনে যাতায়াতে বেড়েছে দুর্ভোগ। দুর্ভোগ লাঘবে ঢাকা-নরসিংদী রেলপথে কমিউটার ট্রেন চালুর দাবি ভুক্তভোগী যাত্রীদের।
সরেজমিন নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনের যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীর পার্শ্ববর্তী শিল্প, কৃষি ও শিক্ষাসমৃদ্ধ জেলা নরসিংদী থেকে দৈনিক কয়েক হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে পর্যাপ্ত সংখ্যক ট্রেনের যাত্রাবিরতি ও আসন বরাদ্ধ না থাকায় যাত্রী দুর্ভোগ ছিল আগে থেকেই। জ¦ালানী তেলের দাম বাড়ার প্রভাবে যাত্রীবাহি বাস ভাড়া বাড়ানোর কারণে জেলার স্টেশনগুলোতে নতুন করে বেড়েছে ট্রেনযাত্রীর সংখ্যা। অনেকেই পরিবহন খরচ ও সময় সাশ্রয়ী করতে ঝুঁকছেন ট্রেন যাতায়াতে।
প্রতিনিয়ত চাকুরিজীবী, শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ নি¤œ আয়ের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ যাতায়াত করছেন ঢাকা, চট্রগ্রাম, কিশোরগঞ্জ ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ হওয়ায় ট্রেনে বেড়েছে যাত্রী দুর্ভোগ।
রেলওয়ের তথ্যমতে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন হয়ে মোট ৫২টি ট্রেন চলাচল করলেও যাত্রাবিরতি রয়েছে মাত্র ২৪টির। এরমধ্যে ১০টি মেইল ট্রেন ও ১৪টি আন্ত:নগর ট্রেন। এসব ট্রেনে মোট দেড়শত আসন বরাদ্ধ থাকলেও দৈনিক কয়েক হাজার যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন।
এতে ভীড় ঠেলে ট্রেনে উঠতে পারেন না নারী, শিশু ও অসুস্থ যাত্রীরা। এসব ট্রেনে গাদাগাদি করে গন্তব্যে পৌঁছাতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। জেলার মোট ৯টি রেলওয়ে স্টেশনে আন্ত:নগর ট্রেনগুলো যাত্রা বিরতি বাড়ানোসহ ঢাকা-নরসিংদী-ভৈরব রেলপথে নতুন ট্রেন চালু করার দাবি জানিয়েছেন যাত্রীরা।
ব্যাংকার রফিকুল ইসলাম জুয়েল বলেন, পর্যাপ্ত সংখ্যক ট্রেনের যাত্রাবিরতি ও আসন বরাদ্ধ না থাকায় নরসিংদীতে ট্রেনে যাতায়াত ভোগান্তি আগে থেকেই ছিল। নতুন করে জ্বালানী তেলের দাম বাড়ায় বাস ভাড়া বাড়ার কারণে ট্রেনে যাত্রীর চাপ আরও বেড়েছে। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
বেসরকারি চাকুরিজীবী মোশারফ হোসেন বলেন, বাসভাড়া ভাড়ার কারণে নরসিংদী থেকে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ট্রেনে কর্মস্থলে যাতায়াত করছেন। প্রচন্ড ভীড় ঠেলে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও রোগীরা ট্রেনে উঠতেই পারেন না।
শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান বলেন, অসংখ্য শিক্ষার্থী ট্রেনে ঢাকায় আসা যাওয়া করে। বাসের ভাড়া দিয়ে যা সম্ভব নয়। শুনেছি যাত্রীদের দাবির মুখে দুর্ভোগ লাঘবে ঢাকা-নরসিংদী-ভৈরব পর্যন্ত কমিউটার ট্রেন চালু করা হবে কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এটা বাস্তবায়ন হলে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের ট্রেন যাত্রায় দুর্ভোগের অবসান হবে।
নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার এটিএম মুসা বলেন, নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন থেকে দৈনিক ৩-৪ হাজার যাত্রী আসা যাওয়া করেন। এছাড়া জেলার আরও ৮টি স্টেশনেও প্রচুর যাত্রীর ভীড় হয়। জ¦ালানী তেলের দাম বাড়ার পর ট্রেনে যাত্রীর চাপ আরও বেড়েছে। যাত্রীরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন পর্যাপ্ত সংখ্যক ট্রেনের যাত্রাবিরতিসহ কমিউটার ট্রেন চালু করার। আমরাও শুনছি এমন একটি ট্রেন চালু হতে পারে। তবে এই বিষয়ে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি। ঢাকা-নরসিংদী নতুন ট্রেন চালু হলে যাত্রী দুর্ভোগ অনেকটা কমে আসবে।
সংবাদটি সর্বমোট 141 বার পড়া হয়েছে