মো. আবু সায়েম, মনোহরদী থেকে:
নিজের বসবাসস্থান নিজে পরিষ্কার করি, ডেঙ্গু প্রতিরোধ গড়ে তুলি। এই প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে গত ২১ জুলাই মনোহরদী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভা ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজাউল করিম এর সভাপতিত্বে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের গৃহীত পরবর্তী পদক্ষেপ ও সামাজিক সচেতনতার বিভিন্ন বিষয়ে তুলে ধরেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াশীষ রায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার রাশেদুল হাসান, মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা রুবি, এবং প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, শিক্ষক ও সুশীল সমাজ, সাংবাদিক ও জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
ডেঙ্গু একটি এডিস মশা বাহিত ভাইরাসজনিত গ্রীষ্মমন্ডলীয় রোগ। ১৯৭৯ ও ১৯৮০ তে এশিয়া ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় ডেঙ্গু মহামারী সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রথম বিবরণ পাওয়া যায়। তারপর ১৯৬২ সালে আমেরিকা মহাদেশে ১৮ টি দেশ থেকে ডেঙ্গুকে নির্মূল করা হয়েছিল।বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ২০০০ সালে ডেঙ্গু জ্বর দেখা দেয়। ২০১৮ সালে এসে ২৬ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়। গত ২১ শে জুলাই বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের ৫২ জন মারা যায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৯০০০ জন।মনোহরদী থানার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুল ইসলাম জানান -এ পর্যন্ত ২৫ জনের মতো ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত করা হয়েছে এবং প্রতিদিন টেস্ট কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।লজিস্টিক সাপোর্টের কোন ঘাটতি নেই।
ডেঙ্গু জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা ১০১ থেকে ১০২ ডিগ্রী পর্যন্ত হয়। এছাড়াও শরীর ব্যথা, মাথাব্যথা চোখের পেছনে ব্যাথা এবং চামড়ায় দাগ থাকতে পারে । এ রোগে আক্রান্ত হলে প্যারাসিটামল ছাড়া এসপিরিন জাতীয় ওষুধ খাওয়া যাবেনা। তরল জাতীয় খাবার লেবুর শরবত রুপানি জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। ডেঙ্গুর এন্টিজেন বা এন্টিবডির সঙ্গে অন্যান্য অনেক পরীক্ষা আছে যা গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ সরকার ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরই মধ্যে পূর্বে বন্ধকৃত স্কুলগুলি পুনরায় আগামী রবিবার থেকে খোলা হবে।
এ ব্যাপারে মনোহরদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, রবিবার মনোহরদী উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি পরিদর্শন করা হয়েছে এবং একযোগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চালানো হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ডেঙ্গুর সচেতনতা সৃষ্টি করা হবে। বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান গণযোগাযোগ মাধ্যমে এনজিও সহ সকল অংশীজনের দায়িত্ব নির্ধারণ ও সমন্বয় সাধনে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সিটি কর্পোরেশন জেলা উপজেলা পৌরসভা ও ইউনিয়নের অনুকূলে হয়তো বরাদ্দের একটি অংশ মশক নিয়ন্ত্রণের ব্যয় করার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন কীটনাশক Insector growth regulator এবং আদর্শ মাত্রার কীটনাশক নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে। এ ব্যাপারে মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমের সাথে কথা বলে জানা যায়, কীটনাশক ঔষধ ছিটানোর জন্য ফগার মেশিন এবং বাজার মনিটরিং এর ব্যবস্থা করছেন যাতে কীটনাশকের কোন ঘাটতি না পড়ে। প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং পৌরসভা মেয়র এর সাথে তিনি রীতিমতো কাজ করে যাচ্ছেন যাতে করে লজিস্টিক সামগ্রীর অভাব না হয়। স্থানীয় সরকার আইন ২০০৯ এর বিধান অনুযায়ী আওতাধীন এলাকায় স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করবে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করে। নাগরিকদের পরিচ্ছন্নতা চর্চার উপর জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত ও অন্যান্য ধর্মের নেতাদের সম্পৃক্ত করা এবং তাদের মাধ্যমে ধর্মীয় বিধানের আলোকে নাগরিকদের সচেতন করা হবে। এডিস মশার লার্ভার উৎস স্থল বিনষ্ট করা এবং প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরো বলেন, আমাদের চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করি যেন, আমাদেরকে এই সমস্যা থেকে রক্ষা করে। এই হোক সকল মানবের ব্রত।
-শান্ত বণিক /নবকণ্ঠ
সংবাদটি সর্বমোট 385 বার পড়া হয়েছে