সজীব আহমেদ:
প্রতিবছর পহেলা বৈশাখের সকালে ইলিশ দিয়ে পান্তা খাওয়ার যে আয়োজন চলে আসছে, রোজার কারণে এবার সেটা হচ্ছে না। ফলে পহেলা বৈশাখ ঘিরে বাজারে ইলিশ বিক্রিরও তেমন তোড়জোড় নেই। তবে ইলিশ কম বিক্রি হলেও দাম বেশ চড়া। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সারা বছরের তুলনায় পহেলা বৈশাখ ঘিরে ইলিশের বাড়তি চাহিদা থাকে।
এবারও বাজারে সরবরাহ যথেষ্ট। কিন্তু রোজার মাস হওয়ায় পান্তা-ইলিশ খাওয়া হবে না বলে বিক্রি কম।
দাম বেশি সম্পর্কে তাঁরা বলছেন, ইলিশের পাঁচ অভয়াশ্রমে দুই মাস ইলিশ ধরা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে বাজারে ইলিশ সরবরাহ কিছুটা কম হওয়ায় দাম বেশি। গতকাল বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গতকাল এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৩০০-১৪০০, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ১৮০০-২০০০, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১১০০-১২০০, ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০-৯০০, ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৫০০ এবং ৩৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।
কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মাসুদ রানা বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ রমজান মাসে পড়ায় এবার ইলিশের বেচাকেনা তেমন নেই। আর এখন অনেক নদ-নদীতে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা চলছে। ফলে দাম কিছুটা বেশি। ’
কারওয়ান বাজারের বাইরে রাজধানীর অন্য বাজারগুলোয় আকারভেদে প্রতি কেজি ইলিশ ১০০-৩০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর জোয়ারসাহারা বাজারে দেখা গেছে, এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি ১৬০০-১৭০০, দেড় কেজি ওজনের ইলিশের কেজি ২০০০-২২০০, ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১,০০০, ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ৫০০-৬০০ এবং ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ৫০০ টাকা।
মাছ ব্যবসায়ী শিপন বর্মণ বলেন, ‘দুই-তিন বছর আগের বৈশাখের আমেজ এখন আর বাজারে নেই। এ বছর রমজান মাসের কারণে বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার যে প্রচল রয়েছে সেটি বন্ধ। আর এখন ইলিশের অফ সিজন। ফলে দাম তুলনামূলক বেশি। এসব কারণে বাজারে ইলিশের বিক্রি কম। ’
ক্রেতা এহসানুল হক বলেন, ‘আগে পহেলা বৈশাখ আসার চার-পাঁচ দিন আগে থেকে বাজার ভরা থাকত ইলিশে। পাড়া-মহল্লায়ও ফেরি করে ইলিশ বিক্রি করতেন বিক্রেতারা। দাম নাগালে থাকায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ খেতেন। গত কয়েক বছর পহেলা বৈশাখের সেই আমেজ আর নেই। কারণ ইলিশের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। ’ ইলিশ ধরা বন্ধ থাকার পরও বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহের বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ইলিশের পাঁচটি অভয়াশ্রমে গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। এর বাইরে নদ-নদীর অন্য এলাকায় ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ না হওয়ায় সেখান থেকে ইলিশ ধরা হচ্ছে। এ কারণে বাজারে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। আর প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ ঘিরে দুই মাস আগে থেকে ইলিশ সংরক্ষণ করেন ব্যবসায়ীরা। সেগুলোই এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। সূত্র: কালের কণ্ঠ
সংবাদটি সর্বমোট 297 বার পড়া হয়েছে