নিজস্ব প্রতিবেদক:
নরসিংদীর শিবপুরে শরীফ হোসেন (১৩) নামে এক কিশোরকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি ও হত্যার দায়ে সহোদর দুই আসামীকে অর্থদণ্ডসহ আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড ও ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শামীমা পারভীন এই দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামী হলো- শিবপুর থানার চৌঘরিয়া এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে মো: আরিফ (৪৩) ও তার ছোট ভাই মো: আলভী (২৫)। আসামী আলভী পলাতক রয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত দুই সহোদর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদমপুর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এম. এ. এন অলিউল্লা জানান, ২০১৪ সালের ৩ জুলাই শিবপুর থানার মুরগীবের এলাকার আলতাফ হোসেন ও মাসুদা আক্তারের ছেলে শরীফ হোসেন (১৩) কে মোবাইলে ফোন করে কাজ দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় মো: আরিফ। পরে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা মো: আরিফ এর কাছে নিখোঁজ শরীফ হোসেনের খোঁজ জানতে চাইলে শরীফ হোসেনের পরিবারের নিকট ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এই ঘটনায় শরীফ হোসেনের মা মাসুদা আক্তার বাদী হয়ে শিবপুর থানায় মো: আরিফসহ অজ্ঞাত আসামী করে লিখিত অভিযোগ করেন।
নিখোঁজের দুই দিন পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর এলাকা থেকে একটি অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় বিজয়নগর থানায় অপমৃত্যু মামলা করে পুলিশ। পরে খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা বিজয়নগরে গিয়ে ছবি দেখে মরদেহটি শরীফ হোসেনের বলে শনাক্ত করেন।
পরে মুক্তিপণ দাবি করা মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ৫ জুলাই আসামী আরিফকে ও ১২ জুলাই তার ভাই আলভীকে গ্রেপ্তার করে শিবপুর থানা পুলিশ। পরে জামিনে বের হয়ে পলাতক রয়েছে আসামী আলভী।
মুক্তিপণ না দেয়ায় তার ভাই আলভীর সহায়তায় শরীফ হোসেনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় আসামী আরিফ। এর আগে শরীফকে ফোন করে কাজ দেয়ার কথা বলে শিবপুরের ইটাখোলা মোড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে বাসে করে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে নিয়ে যাওয়ার পর পরিবারের নিকট ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
মামলায় ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শামীমা পারভীন আসামী দুই ভাইয়ের মধ্যে মো: আরিফকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডসহ আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড ও তার ছোট ভাই মো: আলভীকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডসহ ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। সূত্র: নরসিংদী টাইমস
সংবাদটি সর্বমোট 175 বার পড়া হয়েছে