নবকণ্ঠ ডেস্ক:
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দাম ঠিক করে দেওয়ার পর অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বাজারে ভোজ্য তেলের দাম পাঁচ দফা বাড়ানো হয়েছে। কমানো হয়েছে মাত্র একবার।
সর্বশেষ লিটারে সাত টাকা বাড়িয়ে সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বুধবার থেকে বাজারে এ দাম কার্যকর হবে। তবে পরিবেশক ও খুচরা পর্যায়ে আগের মজুদ করা তেলের ক্ষেত্রে তা কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।
নতুন দাম অনুযায়ী, এখন সয়াবিন তেলের এক লিটারের বোতল কিনতে ভোক্তাকে খরচ করতে হবে ১৬০ টাকা, আর একই পরিমাণ খোলা সয়াবিন কিনতে লাগবে ১৩৬ টাকা। তবে পাম তেলে দুই টাকা বাড়িয়ে লিটার ১১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সচিব মো. নুরুল ইসলাম মোল্লা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ও পাম তেলের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিবেচনায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নতুন এ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। গত রবিবার নিত্যপণ্যের মজুদ পরিস্থিতি, আমদানি ও দাম নির্ধারণ নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে সায় দেয় মন্ত্রণালয়।
নতুন করে নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, খোলা সয়াবিন তেল মিলগেটে দাম ১৩৪ টাকা, পরিবেশক মূল্য ১৩৫ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৩৬ টাকা। বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল মিলগেটে ১৫০ টাকা, পরিবেশক মূল্য ১৫৪ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে ১৬০ টাকায় বিক্রি হবে। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল মিলগেটে ৭২০ টাকা, পরিবেশক মূল্য ৭৪০ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে ৭৬০ টাকা। আর পাম তেল প্রতি লিটার মিলগেটে ১১৬ টাকা, পরিবেশক মূল্য ১১৭ ও খুচরা পর্যায়ে ১১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ভোজ্য তেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভোজ্য তেলের বাজার অস্থির হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি সরকার দাম ঠিক করে দেয়। তখন বোতলজাত এক লিটার সয়াবিনের দাম ছিল ১৩৫ টাকা; খোলা তেলের দাম ছিল ১১৫ টাকা এবং পাম সুপার তেল ছিল ১০৪ টাকা।
গতকাল সর্বশেষ ৬ সেপ্টেম্বর প্রতি লিটার সয়াবিনের (বোতল) ১৫৩ টাকা থেকে সাত টাকা বাড়িয়ে ১৬০ করা হয়; ১২৯ টাকা থেকে সাত টাকা বাড়িয়ে ১৩৬ টাকা; পাম সুপার ১১৬ টাকা থেকে দুই টাকা বাড়িয়ে ১১৮ টাকা করা হয়।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত এক বছরে বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৫১ শতাংশ। এর আগে ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের দাম ছিল ৯০ থেকে ৯৪ টাকা।
এই বিষয়ে ভোজ্য তেল পরিশোধন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান টিকে গ্রুপের পরিচালক মো. তসরিম উদ্দিন বলেন, ভোজ্য তেল প্রায় ৯৭ শতাংশ আমদানিনির্ভর। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে স্থানীয় বাজারে দাম বাড়ে। সেই হিসাবে বিশ্ববাজারে গত এক বছরে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এক বছর আগে প্রতি মেট্রিক টন অপরিশোধিত সয়াবিনের দাম ছিল ৬১৭ মার্কিন ডলার, যা বর্তমানে এক হাজার ৪৬০ ডলার। তবে সেই হিসাবে স্থানীয় বাজারে দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে বলে তিনি দাবি করেন। সূত্র: কালের কণ্ঠ
সংবাদটি সর্বমোট 221 বার পড়া হয়েছে