নবকণ্ঠ ডেস্ক:
নরসিংদীর মনোহরদীতে চলছে বোরো ধান কাটার ধুম। প্রচণ্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে চাষিরা ক্ষেত থেকে পাকা ধান সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফলন ভালো হলেও স্বস্তিতে নেই কৃষক ও গৃহস্থরা। ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য দিনমজুরের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
এ ছাড়া মজুরি বেশি হওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা।
কৃষি শ্রমিকদের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় মাঠের পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন তারা। চলতি মৌসুমে এক দিনের জন্য প্রতি শ্রমিককে তিন বেলা খাওয়াসহ ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে।
সরেজমিনে উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা ধান কাটছেন এবং ঘরে তুলছেন। ধান কেটে ঘরে তোলার পর বিক্রির সময় দাম না পাওয়ায় কৃষকরা হতাশ। অনেকে ধানের বাজারদর শুনে ধান উৎপাদন খরচ তুলতে পারবেন কি না―এমন দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে মাঠে ধান কাটছেন।
কৃষকরা জানান, এক বিঘা জমিতে ধান রোপণ থেকে শুরু করে কাটা-মাড়াই পর্যন্ত খরচ পড়ে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে কৃষক ধান পান ১৮ থেকে ২০ মণ। সে তুলনায় কৃষক এবার বিঘাপ্রতি পাবেন ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
শুকুন্দী এলাকার কৃষক মানিক মিয়া বলেন, ‘আমি পাঁচ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। এতে আমার ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি ৯০ মণ ধান পাব। এতে আমি লাভবান হব না। বাজারে ধানের দাম কম থাকায় লাভবান হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। ধান কাটার কামলার দাম, সার ও কীটনাশসহ প্রয়োজনীয় সকল উপকরণের দাম বেশি। শুধু ধানের দাম কম। প্রতি মণ ধানের দাম ৮০০ টাকা আর একজন কামলার প্রতিদিনের মজুরি ১২০০ টাকা। এই দামে ধান বিক্রি করে প্রতি বিঘা জমিতে মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। ‘
বর্গা চাষি আবুল কালাম বলেন, ‘লাভের আশায় ধার করে বোরো ধান আবাদ করেছিলাম। ধান চাষে যে খরচ আর মৌসুমের সময় কামলার যে দাম তাতে খরচ ওঠানোই সম্ভব নয়। ‘
মনোহরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১০ হাজার ৯১৭ হেক্টর জমিতে। আবাদ করা হয় ১০ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। ফলনও ভালো হয়েছে। ধান কাটার শেষ সময় পর্যন্ত প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে কৃষক নিশ্চিত লাভবান হবেন। সূত্র: কালের কণ্ঠ
সংবাদটি সর্বমোট 192 বার পড়া হয়েছে