নবকণ্ঠ ডেস্ক:
বাংলাদেশের জন্য আজ এক গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিন। দেশপ্রেমিক জনগণের আস্থা ও সমর্থনের ফলেই আজ উন্নয়নের এ নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে। এ সেতুর বাস্তবায়ন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, স্বচ্ছতা, সক্ষমতা, জবাবদিহি ও দক্ষতার নিদর্শন হিসেবে বিশ্ব দরবারে আমাদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস এনে দিয়েছে।
‘পদ্মা সেতু’ উদ্বোধন উপলক্ষে পৃথক বাণীতে এসব কথা বলেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে। বাস্তবায়িত হচ্ছে মেট্রো রেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলসহ অনেক মেগাপ্রকল্প। পদ্মা সেতু আজ উত্তাল পদ্মার বুকে জাতির গৌরবের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতা, বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এবং যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলেই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। এ সেতুর বাস্তবায়ন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, স্বচ্ছতা, সক্ষমতা, জবাবদিহি ও দক্ষতার নিদর্শন হিসেবে বিশ্ব দরবারে আমাদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস এনে দিয়েছে।
পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন সরকার ও জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ফল মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ এক গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিন। তিনি চ্যালেঞ্জিং এ প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত প্রকৌশলী, পরামর্শক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিরাপত্তা তদারকিতে নিয়োজিত সেনাবাহিনী, নির্মাণ শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে তাঁদের অবদানের জন্য অভিবাদন জানান। তিনি জমি প্রদানসহ নানাভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করায় সেতুর দুই প্রান্তের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এ মাহেন্দ্রক্ষণে দেশবাসীকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশ্বব্যাংক পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা করে। কানাডার আদালত সব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে রায় দেন। সব দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিলে জনগণের কাছ থেকে বিপুল সমর্থন পাই। জনতার শক্তি হৃদয়ে ধারণ করে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে আজ আমরা পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে বজ্রকণ্ঠে উচ্চারিত, ‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না’—এই চিরপ্রেরণার বাণীতে উজ্জীবিত হয়ে আমরা প্রমাণ করেছি আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা। ”
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এরই মধ্যে এ অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত পায়রা সমুদ্রবন্দর, বড় নদীগুলোর ওপর নির্মিত সেতু, রামপাল ও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ মোংলা সমুদ্রবন্দরের পূর্ণ ক্ষমতা ব্যবহারে পদ্মা সেতু যোগাযোগব্যবস্থার সূতিকাগার হিসেবে কাজ করবে। এই অঞ্চলে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ বেনাপোল, ভোমরা, দর্শনা প্রভৃতি স্থলবন্দরের মাধ্যমে আন্তর্দেশীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে সার্বিকভাবে দেশের উৎপাদন ১.২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া প্রতিবছর ০.৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য নিরসনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ সেতু অনন্য অবদান রাখবে। সূত্র: কালের কণ্ঠ
সংবাদটি সর্বমোট 216 বার পড়া হয়েছে