সুখের বসবাস মনের গভীরে

 
নূরুদ্দীন দরজী:
-সুখের সন্ধ্যানে মানুষ ঘুরে কতভাবে, কত না জায়গায়। সুখ পাওয়া যায়না কোথাও। আবার কিছুটা দেখা পেলে ও থাকে ক্ষণকাল। আর এ জন্য‌ই বলা হয় সুখ একটি আপেক্ষিক বস্তু। কখনো বা মনে উঁকি দিয়ে আবার চলে যায় বহুদূরে। খুঁজি সুখ বার বার তবু দেখা পাই না তার।
সাধারণত সুখের উপাদান বা উপকরণগুলো হচ্ছে অর্থ, অর্জন, স্বাস্থ্য, ধর্ম,আনন্দ ‌এবং সামাজিকতা। এ সমস্ত উপাদান থাকলে ও অনেকেই সুখের অনুভূতি পান না।তাহলে সুখ কিভাবে, কোথায় পাওয়া যাবে ? বিজ্ঞ মনীষীগণ এবং প্রায় সকল ধর্ম মতেই সুখের বসবাস মনে। ইসলাম ধর্ম মতে সকল কুমানসিকতা বিসর্জন দিয়ে পূতপবিত্র ও নিরহংকার মন নিয়ে থাকলে পারলেই সুখ পাওয়া যায়। গীতায় বলা হয়েছে,” ক্রোধ ও লোভ সম্বরণ করতে পারলেই সুখ পাওয়া যায়,। বৌদ্ধ ধর্ম মতে,”সুখের জন্ম হয় মনের গভীরে যা বাহির থেকে আসেনা,। মহাভারতের শ্লোকে আছে যজ্ঞের প্রশ্নের উত্তরে যুধিষ্ঠির বলেছেন,পৃথিবীর সবচেয়ে প্রশংসনীয় বস্তু হচ্ছে”দক্ষতা,সেরা ধন “বিদ্যা,সেরা প্রাপ্তি ” সুস্বাস্থ্য, এবং সেরা সুখ”সন্তুষ্টি,। কবি বলেছেন,” জো মুজপে মুসিব্বত হ্যায়/ সব দিলকী বদৌলত হ্যায়,। মানুষের অন্তর যদি সুন্দর থাকে তবেই সুখ পাওয়া যায়। সেখানে অন্তরে হিংসা, পরশ্রীকাতরতা, দ্বেষ ইত্যাদি বিরাজ করলে সুখ তা এড়িয়ে চলে। শত চেষ্টা করে ও সুখ পাওয়া বড়‌ই মুসকিল এবং কঠিন বিষয়।
আমার ব্যক্তিগত মতে,মনের গভীরে সুখের বসবাস হলেও সুখ পেতে হলে অবশ্যই সুখের যে সমস্ত উপাদান তা কিছু না কিছু থাকতে হবে। উপাদানগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি হচ্ছে “সামাজিকতা,। একজন মানুষ যে সমাজে বসবাস করে সে সমাজ যদি তাঁকে মূল্যায়ন না করে, ধন সম্পদে ও অনেক প্রাচুর্যের মাঝে ও তাঁর সুখ থাকে না। সুতরাং সমাজে পারস্পরিক প্রীতি, সৌহার্দ্য, ভালোবাসা, মর্যাদা, সম্মান ও বিশেষ করে গ্রহণযোগ্যতা না থাকলে কোন মানুষই সুখ আস্বাদন করতে পারে না। যার যার পেশা অনুসারে তাঁকে সম্মান দিয়ে কথা বললে,মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করলে ,হিংসা বিদ্বেষ ও পরশ্রীকাতরতা না রাখলে তবেই মনুষ্য জীবন সার্থক হয়, ক্ষণস্থায়ী জীবনে মানুষ কিছুটা সুখের অনুভুতি পায়। সুখ এসে ধরা দেয়। সামাজিক মূল্যায়ন ব্যতিরেকে কখনো সুখী হ্ওয়া যায়না। প্রেম ও প্রীতির পরশে সমাজ বদ্ধ হয়ে বাস করাতেই সুখ। বাঙালি কবি শেখ ফজলুল করিম এর কবিতাংশ দিয়ে শেষ করবো, তিনি বলেছেন,” প্রীতি ও প্রেমের পুণ্য বাঁধনে যবে মিলি পরস্পরে, স্বর্গ এসে দাঁড়ায় তখন আমাদের কুঁড়েঘরে,। সকল মানুষ সুখী হোক ভালোবাসা আর প্রেমের স্পর্শে।

সংবাদটি সর্বমোট 174 বার পড়া হয়েছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *