প্রশস্ত হচ্ছে নরসিংদীর দুই মহাসড়ক

নবকণ্ঠ ডেস্ক:

প্রশস্ত হচ্ছে দুই আঞ্চলিক মহাসড়ক। এজন্য নরসিংদী সড়ক বিভাগের আওতায় ইটাখোলা-মঠখোলা-কটিয়াদী সড়ক ও নয়াপাড়া-আড়াইহাজার নরসিংদী-রায়পুরা দুইটি আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথমানে প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নরসিংদী সড়ক বিভাগের আওতায় দুইটি আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মানে ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণের মাধ্যমে ব্যয় সাশ্রয়ী, উন্নত ও নিরাপদ সড়ক স্থাপন করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-আল-রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নরসিংদী সড়ক বিভাগের আওতায় দুইটি আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথমানে প্রশস্ততায় উন্নীতকরণের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার জনগনের সার্বিক আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি, ব্যয় সাশ্রয়ী, উন্নত ও নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা স্থাপন হবে। তাই প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য।’
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।’

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়, ইটাখোলা-মঠখোলা-কটিয়াদি সড়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক। সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ৪৮ কিলোমিটার । সড়কটি ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়কের নরসিংদীর ইটাখোলা নামক স্থান হতে শুরু হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করেছে। সড়কটির ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে নরসিংদী সড়ক বিভাগের আওতাধীন ৩২.৭০ কিলোমিটার এবং কিশোরগঞ্জ জেলার আওতাধীন ১৫.৩০ কিলোমিটার।
ইটাখোলা হতে কটিয়াদি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ৪৮ কিলোমিটার সড়কের বিদ্যমান প্রস্থ ৫.৫ মিটার এবং দুই লেন বিশিষ্ট। নরসিংদী সড়ক বিভাগের আওতাধীন ৩২.৭০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে প্রথম ১৬ কিলোমিটার অংশ গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথমানে উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় মজবুতিকরণ করা হলেও অবশিষ্ট ১৬ দশমিক ৭০ কিলোমিটারের কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। যেখানে বহু বছর ধরে কোন প্রকার বড় ধরনের সংস্কার কাজ না হওয়ায় এ সড়কাংশের বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের ডিপ্রেশনস, আন্ডোলেশনসহ পেভমেন্ট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সড়কটির প্রস্থ কম হওয়ায় প্রায়ই বিপরীতমুখী ট্রাফিকগুলো দুর্ঘটনা কবলিত হয়।

রায়পুরা-নরসিংদী-মদনগঞ্জ সড়কটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক, যা উপজেলা শহর রায়পুরাকে জেলা শহর নরসিংদীর সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ৫৪ কিলোমিটার। সড়কটির বিদ্যমান প্রস্থ ৫.৫ মিটার এবং দুই লেন বিশিষ্ট। সড়কটি ঠঙ্গি-ভৈরব রেল লাইন সমান্তরালে অবস্থিত এবং উপজেলা শহর রায়পুরা হতে নরসিংদী শহরে যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পথ। সড়কটির ১৮তম কিলোমিটারে আরশীনগর স্থানটি রায়পুরা-নরসিংদী, সাহেপ্রতাপ-নরসিংদী ও পুটিয়া-শ্বাসপুর সড়কের সংযোগস্থল তাই আরশীনগর এলাকায় সবসময়ই যানজট সৃষ্টি হয়।
রায়পুরা-নরসিংদী সড়ক ব্যবহার করে বিপুল সংখ্যক যানবাহন চলাচল করায় এবং শহর এলাকায় ছোট বড় যানবাহনসহ অন্যান্য যানবাহ রেলক্রসিংয়ের উপর দিয়ে চলাচল করে তাই সড়কের আরশীনগর এলাকায় যানজটের পরিমাণ সাম্প্রতিক সময়ে বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সড়কটি প্রশস্তকরণ যথাযথমানে উন্নতীকরণ করা প্রয়োজন। এ জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এই সড়ক দুটি ৫.৫ মিটার হতে উভয় পাশে এক দশমিক ৫ মিটার করে হাডশোল্ডারসহ ১০.৩০ মিটার প্রস্থে উন্নীতকরণ করা হবে।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে- ২৩ দশমিক ৩৬ হেক্টর ভূমি, পুনর্বাসন (মসজিদ, মন্দিরসহ অন্যান্য স্থাপনা পুননির্মাণ), মাটির কাজ, পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ, বিদ্যমান পেভমেন্ট পুনঃনির্মাণ, নতুন হার্ড সোল্ডার, সার্ফেসিং, রিজিড পেভমেন্ট, কালভার্ট পুন:নির্মাণ, কালভার্ট প্রশস্তকরণ, ৮টি আন্ডারপাস, সসার ড্রেন, আরসিসি ইউ ড্রেন, কংক্রিট স্লোপ প্রটেকশন, টো-ওয়াল, আরসিসি রিটেনিং ওয়াল, আরসিসি বিম প্যালেসাইডিং, সাইড রোডগুলোর উন্নয়ন, ইন্টারসেকশন এবং বাস-বে নির্মাণ করা হবে। সূত্র: সারাবাংলা/জেজে/এমও

সংবাদটি সর্বমোট 320 বার পড়া হয়েছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *