পলাশে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে ওরা এখন সুখে আছে

নবকণ্ঠ ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে ওরা এখন সুখেই আছে । এখন আর নানান টেনশনে দিন কাটেনা । সাহেবের কটূ কথা শুনতে হয় না।

বলছিলাম পলাশ উপজেলার মাঝেরচর গ্রামের পাঁচ সন্তানের জনক-জননী ষাট বছর বয়সী গৃহহীন-ভূমিহীন কাজল মিয়া আর তার স্ত্রী পঞ্চাষোর্ধ আলেছা বেগম এর সংসার জীবনের সুখ-দুঃখের কথা ।

কাজল মিয়া’র নিজের বাড়িঘর বলতে কিছুই ছিল না। তার স্ত্রী আলেছা বেগমের বাপের বাড়িতেও ঠাঁই পাবার মতো একখন্ড জমি ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার জমিসহ সেমিপাকা একক গৃহ পেয়ে তারা এখন সুখেই আছে। তারা এখন পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের “মাঝেরচর আশ্রয়ণ প্রকল্প” এর স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে সুখেই দিন যাপন করছে।

নতুন বাড়িতে উঠে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। অন্যান্যদের স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছেন। এই প্রকল্পে ২১ টি গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবার বসবাস করছে। ভিন্ন ভিন্ন পরিবার হলেও তারা প্রত্যেকে প্রত্যেকের আত্মীয় হয়ে গেছেন । বাড়ির আঙ্গিনা সমূহে বৃক্ষের সমারোহ দেখে মনে হয় চির চেনা পল্লী মায়ের সবুজে ঘেরা এ যেন ২১টি পরিবারের এক পল্লীগ্রাম । ভূমি এবং ঘর পেয়ে তারা খুবই খুশী। কারণ, এখন মাস শেষে বাড়ি ভাড়ার চিন্তা করতে হয় না।

খাস জমিতে বাচারি করে থাকতো বলে প্রভাবশালীদের তাফালিং দেখতে হয় । ভাসমান জীবনের অবসান ঘটিয়ে স্থায়ী বাসিন্দা করে দিয়েছেন বলে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করেন। তাঁর দীর্ঘায়ূ কামনা করেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাগণ ।

মাছ শিকারি(জেলে)কাজল মিয়া সন্তান-সন্তুতি নিয়ে থাকতো পাশের টেংগর পাড়া গ্রামের ঢাকা প্রবাসী টিটু মোল্লা বাড়িতে । বিশাল বাড়ি ফলের বাগান, বাড়িঘর দেখেশুনে রাখা ছিল তার কাজ। প্রতিটি মুহূর্ত তাকে এবং তার স্ত্রীকে টেনশনে থাকতে হতো। বাড়ির কোন দিন দিয়ে না জানি কী ক্ষতি হয়ে যায় বা কেউ ক্ষতি করে ফেলে বা গাছের ফলফলাদি নষ্ট করে ফেলে। নতুবা মালিকের গালমন্দ শুনতে হবে।এখন তাদের কোন টেনশন নাই। সুখেই আছে তারা। শুধু তারাই নন,এই নতুন পল্লীর নারী-পুরুষ প্রায় সকলেই কোন না কোন কাজ করে আয়রোজগার করে চলছে।

এই প্রকল্পের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখানে মাছ শিকারি ছাড়াও রয়েছে দিন মজুর,রাজমিস্ত্রী,জোগালী, বর্গাচাষী, পাওয়ার লুম শ্রমিক ও অটোরিক্সারিক্সা চালক। এখানে সবাই কর্মজীবী। গৃহিনীরাও কোন না কোন কাজ করে সাংসারিক আয় বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করছে।

এই পল্লীর বাসিন্দা হেনা আক্তার ভাগীতে অন্যের গাভী পালন করে বছরে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বাড়তি আয় করার সুযোগ হয়েছে নিজ বাড়ি-ঘর পেয়েছে বলে। তার স্বামী কিরণ মিয়া রাজমিস্ত্রীর কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করে। বাড়ি ভাড়া দিতে হয় না বলে এখন সংসারজীবনে তারাও সুখী। তাদের দুই ছেলে। পাশের ক্ষুদী মাহমুদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তারা পড়ছে।

উল্লেখ্য, “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না “ প্রধানমন্ত্রীর এই দৃঢ় প্রত্যয়ের সফল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১ম ও ২য় পর্যায়ে নরসিংদী জেলায় মোট ২৮৭টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। ৩য় পর্যায়ে জেলার ৬টি উপজেলায় ৪১৯টি ঘর নির্মাণের অনুমোদন পাওয়া যায়।

এর মধ্যে পলাশ উপজেলায় ৬৩টি ঘর রয়েছে। গত ২১ জুলাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশব্যাপী ২৬২২৯ জন উপকারভোগীর মধ্যে ভূমি ও গৃহ হস্তান্তর করেন। এর মধ্যে পলাশ উপজেলায় ৪২টিসহ জেলায় বিতরণ করেন জমিসহ ২৫৬টি ঘর।

সংবাদটি সর্বমোট 138 বার পড়া হয়েছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *