নরসিংদীতে খোলাবাজারে চাল আটা বিক্রি শুরু

নবকণ্ঠ ডেস্ক: বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাজার মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে সমগ্র দেশের ন্যায় নরসিংদীতেও গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে জেলার ৪৯টি পয়েন্টে খোলাবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রি শুরু করা হয়েছে। নরসিংদী’র জেলা প্রশাসক ও
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান প্রধান অতিথি হিসেবে নরসিংদী শহরের শিক্ষা চত্বর পয়েন্টে খোলা বাজারে চাল বিক্রির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোঃ মোস্তফা মনোয়ার এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নরসিংদী পৌরসভার কর্মতৎপর বিচক্ষণ মেয়র আমজাদ হোসেন বাচ্চু, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ হুমায়ুন কবির, নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী মোর্শেদ ও ঢাকা থেকে আগত ভোক্তা অধিকার বিষয়ক কর্মকর্তা । এসময় জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান বলেন, খাদ্যশস্য বিক্রিতে কোন ডিলার সামান্যতম অনিয়ম করলে তার লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

এর আগে নরসিংদী’র জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান গত বুধবার(৩১আগস্ট)জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং-এ খাদ্যশস্য বিক্রির বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

প্রেস ব্রিফিং-এ তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে নরসিংদী জেলায় একযোগে ৪৯ টি দোকানের মাধ্যমে ৩০টাকা কেজি হারে ওএমএস চাল বিক্রি করা হবে। সেখানে প্রতি পরিবারের পক্ষে একজন লোক প্রতি মাসে ৫ কেজি করে দুই বার ১০ কেজি ওএমএস চাল ক্রয় করতে পারবে। এছাড়াও, শ্রমঘন নরসিংদী জেলায় ১৫টি দোকানের মাধ্যমে ১৮টাকা কেজি দরে আটা বিক্রি করা হবে।

এবারের ওএমএস চাল ও আটা বিক্রয় কার্যক্রমের আওতায় সাধারণ ক্রেতাদের পাশাপাশি টিসিবি’র কার্ডধারীরাও চাল ও আটা ক্রয় করতে পারবে। ওএমএস কার্যক্রমে প্রতিদিন একজন ডিলার ০২টন চাল বরাদ্দ পাবে। কোন লাইনে ক্রেতা থাকা অবস্থায় ডিলারের জন্য বরাদ্দকৃত চাল শেষ হয়ে গেলে পরবর্তী দিন ক্রেতাদের আসার অনুরোধ জানানো হবে।

ওএমএস কার্যক্রমের পাশাপাশি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিও চলমান থাকবে। ওএমএস কার্যক্রমের আওতায় নরসিংদী জেলায় ৬২,৯৫৮ জন ১৫ টাকা কেজি দরে প্রতিমাসে সর্বোচ্চ দুইবার চাল ক্রয় করতে পারবে। উল্লেখ্য, পূর্বে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০টাকা দরে চাল বিক্রয় হলেও সরকারের সিদ্ধান্তের আলোকে বর্তমানে পনেরো টাকা কেজি দরে এ চাল বিক্রয় হবে।

এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোস্তফা মনোয়ার, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ হুমায়ুন কবির, জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক,নরসিংদী প্রেসক্লাবের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব সহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, “এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের মানুষ যারা আমার যুবক শ্রেণি আছে তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়”। জাতির পিতার স্বপ্ন পুরণে তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় নির্দেশনা অনুযায়ী খাদ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক বৃহস্পতিবার (০১ সেপ্টেম্বর-২০২২) হতে দেশব্যাপী ওএমএস কার্যক্রমের আওতায় জনসাধারণকে স্বল্প মূল্যে চাল ও আটা বিক্রির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

এ কার্যক্রমের আওতায় সারা দেশে সর্বমোট ২,৩৬৩ টি কেন্দ্রের মধ্যে ১,৯৬০ টি কেন্দ্রে শুধু চাল এবং ৪০৩ টি কেন্দ্রে চাল ও আটা বিক্রির কার্যক্রম আগামী তিন মাস ব্যাপী অর্থাৎ সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর চলমান থাকবে। প্রতি সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার ব্যাতীত ০৫ দিন এবং মাসে সর্বোচ্চ ২২ দিন চাল ও আটা বিক্রি করা হবে।

ওএমএস কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা ও উপজজেলা প্রশাসন কর্তৃক ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হচ্ছে যারা মাঠ পর্যায়ে ওএমএস চাল বিক্রি মনিটরিং করবেন।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সক্রিয় কর্মী হিসেবে সরকারের এ মহতী উদ্যোগ বহুল প্রচার এবং জনগণকে সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে নির্দেশনা অনুযায়ী চাল ক্রয়ে উদ্বুদ্ধ করবেন বলে প্রত্যাশা করছি।

সংবাদটি সর্বমোট 115 বার পড়া হয়েছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *