নবকণ্ঠ ডেস্ক:
জাতীয় গ্রীড সমস্যার কারণে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নরসিংদীর টেক্সটাইল শিল্প মালিক ও শ্রমিকরা। একই সঙ্গে লোকসানের মুখে পড়েছেন জেলার বিদ্যুৎ নির্ভর বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মালিকসহ ব্যবসায়ীরা।
টেক্সটাইল শিল্প মালিকরা জানান, দেশিয় বস্ত্র চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগ উৎপাদন হয় নরসিংদী জেলার টেক্সটাইল ও বস্ত্রশিল্পগুলোতে। বিদ্যুৎ না থাকায় টানা ৮ ঘন্টা জেলার ছোট বড় প্রায় ১২ হাজার শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হয়। এতে অন্তত ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা করছেন শিল্পমালিকরা। পাশাপাশি উৎপাদন করতে না পারায় মজুরি বঞ্চিত হয়েছেন লাখো শ্রমিক।
নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃপক্ষ, শিল্পমালিক ও স্থানীয়রা জানান, জাতীয় গ্রিডে সমস্যার কারণে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর থেকে জেলার শিল্পাঞ্চল চৌয়ালা, মাধবদী, বিসিকসহ ৬ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যার পর কিছু এলাকায় ও রাত ১০টার পর জেলার শিল্পাঞ্চলগুলোতে পুরোপুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে রাত ১টার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে জেলার ১২ হাজারেরও বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধ থাকায় শিল্পখাতে অন্তত ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা করছেন টেক্সটাইল শিল্প মালিকরা।
চৌয়ালার টেক্সটাইল শিল্প মালিক মো: তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ যাওয়ার পর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কিছু সময় কারখানা চালু রাখা সম্ভব হলেও পরে বন্ধ করে দিতে হয়। এতে শ্রমিকরা বেকার সময় পার করেন। বেশিরভাগ শ্রমিক প্রোডাকশনের ওপর ভিত্তি করে মজুরি পায়, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে তারা মজুরি থেকে বঞ্চিত হয়। রাত সাড়ে ১১টার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া গেলেও তখন শ্রমিকরা চলে যাওয়ায় উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়েছে। এতে আমার কারখানায় ৩০ লাখ টাকার মতো লোকসান হয়েছে।
চৌয়ালা টেক্সটাইল শিল্প মালিক সমিতি নরসিংদীর, সাধারণ সম্পাদক মো: নান্নু আলী খান বলেন, টানা ৯ ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকায় উৎপাদনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরুর পর রাতেও শত শত টেক্সটাইলে উৎপাদন শুরু করতে না পারায় ২৪ ঘন্টা উৎপাদন ব্যাহত হয়। এতে মালিক শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। বিশেষ করে শ্রমিকরা তাদের মজুরি পুষিয়ে নিতে পারবে না।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন (বিটিএমএ) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় টেক্সটাইল সমৃদ্ধ নরসিংদী জেলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আনুমানিক হিসেবে টেক্সটাইল শিল্পখাতে জেলায় প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমাদের জানামতে এর আগেও একাধিকবার বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে। এসবের পর তদন্ত কমিটি গঠন হলেও কমিটির সেরকম কোন রিপোর্ট আমরা জানি না। দায়িত্বশীলদের অবহেলার কারণে যদি এই বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া উচিত। যাতে ভবিষ্যতে এমন বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা আর না ঘটে। সূত্র: নরসিংদী টাইমস
সংবাদটি সর্বমোট 236 বার পড়া হয়েছে