মো. হাবিব উল্লাহ, মনোহরদী থেকে:
নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার খিদিরপুরের ইউপি সদস্যের দেয়া বিরিয়ানি খেয়ে ১৬টি মসজিদের মুসল্লী ও তাদের পরিবারের দুই শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
গতকাল শুক্রবার (০২ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ইউপি সদস্য তার নির্বাচনী এলাকার ১৬টি মসজিদে বিরিয়ানি দেন এবং এতেকরে দুই শতাধিক মানুষের জ্বর, বমি ও ডায়রিয়ার সৃষ্টি হয়।
আজ শনিবার (০৩ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকেই বমি, জ্বর, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে শুরু করে। সকাল থেকেই স্থানীয় ফার্মেসি গুলোতে শতশত মানুষ খাবার স্যালাইন, প্যারাসিটামল কিনতে ভীড় করে।
জানা গেছে, মনোহরদীর খিদিরপুর ইউপির ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য সেলিনা বেগম প্রায় ৪ হাজার মানুষের জন্য বিরিয়ানি রান্না করে প্লাস্টিকের প্যাকেটে ঢুকিয়ে তা বিতরণ করেন। তার নিজ বাড়িতে বাবুর্চি দিয়ে বিরিয়ানি রান্না করে পূর্ব ও পশ্চিম রামপুর, নূরআহাম্মদপুর, চরসাগরদী ইত্যাদি গ্রামের জুমুআর মসজিদে এই বিরিয়ানির প্যাকেট বিতরণ করা হয়।
ভুক্তভোগী মুসল্লীদের দাবী, এ বিরিয়ানি খেয়ে তারা ও তাদের পরিবারসহ এলাকার দুই শতাধিক লোক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা বমি, ডায়রিয়া, পেট ব্যাথা ও জ্বরে আক্রান্ত হন।
বিষয়টি এলাকার জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে এক ভূক্তভোগী নূর আহাম্মদপুর গ্রামের কালাম (৩২) জানান, এ বিরিয়ানি খেয়ে রাত ২টা থেকে তিনি এবং তার পরিবারের ৩ সদস্যসহ যারা বিরিয়ানি খেয়েছেন তাদের প্রায় সবাই পেটব্যথা,
বমি ও জ্বরসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।
একই গ্রামের আবু সায়েদ (২৫) জানান, তারও একই অবস্থা।
রামপুর বাজার মসজিদের ইমাম ও খতীব ক্কারী ওসমান গনি জানান এ বিরানি খেয়ে তার মেয়েও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এছাড়াও রামপুরের অনেকেই তাকে বিরানি খেয়ে অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে খিদিরপুর ইউপি ৪, ৫ ও ৬ নং সদস্য সেলিনা বেগম জানান, আমি মনে মনে স্থির করেছিলাম মেম্বার হতে পারলে আমার নির্বাচনী এলাকার সবাইকে বিরিয়ানি খাওয়াবো। এরই প্রেক্ষিতে এই আয়োজন করেছিলাম। তিনি আরো দাবী করেন, মান সম্মত চাল, তেল, মসলা ও কক মুরগী দিয়ে হাতিরদিয়া থেকে বাবুর্চি এনে রান্না করিয়েছিলেন। এখন কেউ যদি শত্রুতা করে খাবারে কিছু মিশিয়ে থাকে তাহলে মেশাতে পারে। তবে আমার জানামতে খাবারে কোনকিছু আমরা মেশাইনি। তিনি আরো বলেন, অসুস্থদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে খোঁজ নিয়ে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. রাশেদুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, আমি শুনেছি, এ পর্যন্ত প্রায় ১৫-২০ জন রোগী এখানে এসেছেন তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, খাবার সম্ভবত স্বাস্থ্যসমত ছিল না। যার ফলে এটা হয়েছে।
-শান্ত বণিক/নবকণ্ঠ
সংবাদটি সর্বমোট 353 বার পড়া হয়েছে