নবকণ্ঠ ডেস্ক:
নরসিংদীতে হত্যা মামলার আসামিদের ফাঁসাতে নিজের শরীরে নিজেই ছুরি দিয়ে আঘাত করে চামড়ার ভেতরে লোহার টুকরো রেখে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে নাটক তৈরি করেন মামলার স্বাক্ষী নিজেই।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে নরসিংদী জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আল আমীন।
গত ১৪/১০/২২ তারিখ দুপুর অনুমান সাড়ে ৩টায় পাঁচদোনা এলাকায় একজন ব্যাক্তিকে গুলি করা হয়েছে মর্মে মিডিয়ার মাধ্যমে জেলা পুলিশের দৃষ্টিগোচর হয়। সংবাদ প্রাপ্তির পর তাৎক্ষণিক ভাবে নরসিংদী জেলা পুলিশ ঘটনার বিষয়ে তদন্তে নামে। তদন্তকালে জানা যায় মোঃ সজিব মিয়া (৩০), পিতা-বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ দুলাল মিয়া, সাং- আসমান্দীর চর (মুক্তিযোদ্ধা আর্দশ গ্রাম), থানা-মাধবদী, জেলা-নরসিংদী উক্ত ঘটনার স্বীকার হইয়াছে। ঘটনা ঘটার পর পরই উক্ত ব্যক্তি প্রথমে নরসিংদী ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায় এবং সেখানেও চিকিৎসা গ্রহন করে। উক্ত ঘটনার ঘটনাস্থল হিসাবে সজিব পাঁচদোনা বাজারে বাসপট্টি আনিস ট্রেডার্স এর সামনে বলিয়া উল্লেখ করে এবং ঘটনার সময় তার সাথে তার বন্ধু মামুন (২৬), পিতা- মৃত কালাম, সাং- পাথরপাড়া (আঃ আলী মেম্বারের পাশের বাড়ী শশুড় মতি মিয়া), থানা- মাধবদী, জেলা- নরসিংদী উপস্থিত ছিল বলে জানায়।
জেলা পুলিশ প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থলের আশেপাশে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পর্যালোচনাকালে ঘটনার কোন অস্থিত্ব পায় না। তবে উক্ত সময়ে তাদেরকে স্বাভাবিক ভাবেই হেটে যেতে সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায় এবং আর কাউকেই আশপাশে দেখা যায় নাই। পরবর্তিতে উল্লেখিত সজিব মিয়ার বন্ধু মামুনকে জেলা পুলিশ প্রাথমিকভাবে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে জানায় প্রকৃত পক্ষে উল্লেখিত মোঃ সজিব মিয়া(৩০), শিবপুর থানার মামলা নং-১(৪)১৫, ধারা-৩০২/৩৪ এর স্বাক্ষী।
গত ১১/১০/২২ তারিখ উক্ত মামলার নরসিংদী কোর্টে স্বাক্ষী ছিল। পরবর্তিতে ১২/১০/২২ তারিখে উল্লেখিত সজিব মিয়া মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে মাধবদী থানার জিডি নং-৭৬২ তারিখ-১২/১০/২২ দাখিল করে, সেখানে টিটু, মোস্তফা, মাসুম ও পলাশদের বিরুদ্ধে তাকে উক্ত সাক্ষীর কারনে হুমকী প্রদান করা হয়েছে মর্মে জানায় । মূলত এই বিষয়টি সবার কাছে গ্রহনযোগ্য করার জন্য মাধবদী থানাধীন পাঁচদোনা দাসপাড়া সাকিনস্থ প্রফুল্ল এর পুকুরপাড়ের এক কোনায় নির্জন স্থানে সঙ্গীয় বন্ধু মামুনকে নিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক সজিব মিয়া নিজেই তার শরীরের ডান পাশে বুকের উপর ছুরি দিয়ে চিরে কালো এক ধরনের বস্তু প্রবেশ করায় এবং শরীরে আরও কয়েকটা স্থানে ছুরি দিয়ে নিজেই পোচ দেয় এবং মামুনকে বলে এই অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়া যেতে। পরবর্তিতে তারা নরসিংদী ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে যায় এবং সেখানে ডাক্তারকে সে গুলিবিদ্ধ হয়েছে মর্মে উপস্থাপন করলে তাকে পরবর্তিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে তাৎক্ষনিক ছেড়ে দেন। মাধবদী আসলে সজীবকে তার বন্ধু মামুনের বক্তব্য অনুযায়ী মুখোমুখি করলে সে পুরো ঘটনার কথা স্বীকার করে এবং বলে জিডিতে উল্লেখিত আসামীদের শায়েস্তা করা এবং পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য উক্ত ঘটনা সাজিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, সজীব মিয়ার বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানার মামলা নং-৫৩(৪)২০০৯, জিআর নং-২২৭/২০০৯, ধারা-৩৯৯/৪০২ পেনাল কোড পাওয়া যায়।
সংবাদটি সর্বমোট 136 বার পড়া হয়েছে